নবম শ্রেণী প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর ২০২১

১৯৫২ ১৯৬৬ ১৯৭০ সাল বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু সময় । এর মাঝে কোন সালের ঘটনা প্রবাহ বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনে অধিকতর প্রেরণা যুগিয়েছিল বলে তুমি মনে করো যুক্তিসহ তোমার মতামত তুলে ধরোঃ
১৯৫২ ১৯৬৬ ১৯৭০ সাল গুলো বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 1952 সালে ভাষা আন্দোলন এবং 66 এর 6 দফা ও 70 এর গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সময়। এরমধ্যে আমি 1952 সাল কে বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। কারণ 1952 সালে প্রথম বাঙালি দের মাঝে জাতীয়তাবাদের প্রচার শুরু হয়।
ভাষা আন্দোলন মূলত একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন।সাংস্কৃতিক আন্দোলন হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এর গুরুত্ব অপরিসীম ও সুদূরপ্রসারী। আন্দোলন প্রকৃতপক্ষে বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আন্দোলনের সাথে মিশে আছে শহীদদের রক্ত। এ আন্দোলন কেড়ে নিয়েছে বহু বাঙালির প্রাণ। বাংলাদেশ বিনির্মাণে ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ভূমিকা নিম্নরূপ।

জাতীয় চেতনা সৃষ্টি
জাতীয় চেতনার সৃষ্টিতে ভাষা আন্দোলন গুরুত্ব অপরিসীম । এ আন্দোলন বাঙালি জাতির ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদ বিকাশে উন্মেষ ঘটায় । এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি নিজেদের স্বতন্ত্র রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। নিপীড়িত ও গর্বিত বাঙ্গালী জাতি রাজনৈতিক সচেতনতা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করে।
দাবি আদায়
বাঙ্গালীদের দাবি আদায়ের একটি বিশেষ পদক্ষেপ হলো এ আন্দোলন । ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির বহু ত্যাগের বিনিময়ে জাতীয়তাবাদী দাবি আদায়ের শিক্ষা পায় তারা ধীরে ধীরে দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে। তারা আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার কায়েম সংগ্রাম চালিয়ে যাবার লক্ষ্যে দৃঢ় সংকল্প পোষণ করেন।
একাত্মতা ঘোষণা
একাত্মতা ঘোষণা ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অনস্বীকার্য এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিশেষ করে বুদ্ধিজীবী সমাজ জনগণের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে ছাত্র কৃষক জনতা শ্রমিক ও বুদ্ধিজীবী সকলে একই কাতারে শামিল হয়। ফলে সকলের সাথে জাতীয়তাবাদী বন্ধন সৃষ্টি হয় আর এ একাত্মতাবোধ জাতীয়তাবাদ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শহীদ দিবসের মর্যাদা শহীদ দিবসের মর্যাদা ভাষা আন্দোলনের একটি সফল ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির শহীদ দিবসের মর্যাদা উপলব্ধি করতে শিখেছে । এ উপলব্ধি বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।
সাম্প্রদায়িকতার রোধ
সাম্প্রদায়িকতা রোধকল্পে ভাষা আন্দোলনের অবদান কম নয় । এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙ্গালীদের মনের সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মনোভাব গড়ে ওঠে। সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী মনোভাব জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে আরো গতিশীল করে তোলে।
পরবর্তীতে আন্দোলনের ডাক
ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি পরবর্তী আন্দোলনের ডাক দেয়। ভাষা আন্দোলনের মধ্যে পরবর্তী আন্দোলনে নিহত হয় । এ আন্দোলন পরবর্তীতে আন্দোলনকে আরও জোরদার করে তোলে ফলে জাতীয়তাবাদ বিকাশের পথ আরো সুগম হয়।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভাষা আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।